হাক্কানী ওজিফা
“ওজিফা” এটি একটি সুপরিচিত আরবি শব্দ যার আভিধানিক অর্থ-প্রতিনিয়ত ধর্মশাস্ত্র পাঠকরা। “হাক্কানী ওজিফা” এটি হজরত মাওলানা সূফী আজানগাছী (রহঃ) তাঁর সাধনাকালে হজরত খিজির (আঃ) এর সাক্ষাৎ লাভে এই ওজিফা তিনি পান। এর মধ্যে কোরআন কারিমের চারটি বিশেষ সূরা দেওয়া আছে, সূরা ফাতিহা, সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক, সূরা নাস এই চারটি সূরার বিশেষ গুন আছে। কোরআন এর প্রতিটি সূরার এক একটি গুন আছে, তিনি তাঁর এই ওজিফাতে বিশেষ চারটি সূরা দিয়ে সকল মুসলিম উম্মাহকে আমল করার উপদেশ দেন। এর মধ্যে একটি “ দরুদ” আছে যেটি “হাক্কানী দরুদ” নামে পরিচিত। এবং সর্বশেষে একটি ছয় কথার মোনাজাত দেওয়া আছে। এটি এমন কোনো ওজিফা নয়, যেটি পড়লে অন্য কোন আমল করা যায়না। এই ওজিফার একটি বিশেষ গুন হচ্ছে এটি খুব অল্প সময় পড়ে অধিক আমলের অধিকারী হওয়া যায়। যারা হাক্কানী ওজিফাকে অবজ্ঞা করবে তারা কোরআন কেই অবজ্ঞা করল। কেননা কোরআন কারিমে আসেছে, তোমরা কি কিতাবের কিছু অংশে ইমান রাখ আর কিছু অংশ অস্বীকার কর? সুতরাং তোমাদের মধ্যে যারা তা করে দুনিয়ার জীবনে তারা লাঞ্চিত হবে এবং পরবর্তীতে তারা জাহান্নামের অধিবাসী হবে। সুতরাং হাক্কানী ওজিফাকে অস্বিকার করলে কোরআনের ২২ টি আয়াতের অস্বিকার করা হয়। হাক্কানী ওজিফা এটি একটি কোরআনী ওজিফা, কেননা এতে কোরআনের সূরা বর্তমান। হাক্কানী ওজিফা আমলকারী দের জন্য কোরআন সুপারিশ করবে, কেননা কিয়ামতের দিন কোরআন তাঁর পাঠকের জন্য সুপারিশকারী হবেন। এই মহা কোরআনী ওজিফা হাক্কানী আঞ্জুমানের অনুসারীগন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের আগে ও পরে আমল করে অধিক পরিমান আমলের অধিকারী হয়ে থাকেন।
একবারের ঘটনা জনাব আব্দুল হামিদ সাহেব (বাংলার গর্ভ) হাক্কানী ওজীফা এবং উরসেকুলের ব্যপারে জানার জন্য মিশরে গেলেন। ঠিক কি ভুল খোঁজ নেওয়ার জন্য কায়েরোর প্রধান অধ্যাপকের সাথে মোলাকাত করলেন এবং হাক্কানী ওজিফার ব্যপারে জিজ্ঞাসা করে জানতে পারলেন তিনি নিজেই হাক্কানী ওজিফা পড়েন এবং তাঁর উপর আমল করেন।
একই সময় তিনি মদিনা শরীফে মসজিদে নববীতে নামাজের ওয়াক্তে পৌঁছালেন। নামাজের শেষে তিনি দেখলেন অনেক লোক হাক্কানী ওজিফা পড়তে শুরু করলেন। পরে তিনি ফিরে এসে বিশ্বাস করে নিলেন আলহামদুলিল্লাহ্ হাক্কানী ওজিফা সঠিক ও এর উপর আমল করা প্রয়োজন।
বিনা পয়সায় দ্বীন দুনিয়ার শান্তি ও মঙ্গল
হাক্কানী আঞ্জুমানের ওজিফা
ওজিফা পড়িবার নিয়মঃ-প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পরে বা পূর্বে ওজুর সহিত আল্লাহ তায়ালার দিকে মন রুজু করিয়া নিম্নলিখিত ওজিফা পরিবেন।প্রথম দিন ওজিফা আরম্ভ করিবার পূর্বে দুই রাকাত নফল নামাজ পড়িয়া লইবেন।
ওজিফাঃ-আউজবিল্লাহ ও বিসমিল্লাহের সহিত সুরা ফাতেহা,আমিন পর্যন্ত একবার।বিস্মিল্লাহের সহিত ‘এখলাস’ তিন বার, ‘সুরা ফালাক’এক বার, ‘সুরা নাস’এক বার।পরে হাক্কানী দরূদ শারীফ তিন বার। পড়িয়া নিম্ন লিখিত মোনাজাত করিবেন।(সমায় বুঝিয়া বিজোড় ভাবে আপনি যত বার ইচ্ছা আমল করিতে পারেন)।
ওজিফার উপকারিতাঃ-এই ওজিফা অন্যান্য প্রচালিত ওজিফা সমুহের সার,নিতান্ত সহজ ও সংক্ষিপ্ত বলিয়া সকলেই ইহা আমল করিতে পারেন। ইহা পড়িতে অল্প সময় লাগে অথচ কেবল পাঁচ ওয়াক্তের ওজিফায় সওয়া আট খাতম কোরআন শারীফের জিল্লী সওয়াব হাসিল করা যায়।হক পথে থাকিয়া নিয়মিত আমল করিলে আল্লাহ তায়ালার ফাজলে দ্বীন দুনিয়ার সর্বপ্রকার শান্তি ও মঙ্গল হয় ও রুহানি তরক্কী লাভ হয়,আল্লাহ তায়ালা ও রসুল(সাঃ)এবং ওলি আল্লাহগণের প্রতি ইশক,মোহাব্বত,এতেকাদ,ও ভক্তি বৃদ্ধি পায়। স্বাপ্ন যোগে আম্বিয়া আওলিয়ার দর্শন লাভ হয়।মানব,জ্বিন,এর যাবতীয় অনিষ্ট ও যাদু টোনা হইতে নিরাপদ থাকা যায়।ধন জন মানের উন্নতি, রুজি রোজগারে বরকত ও ঋণ পরিশোধের উপায় হয়।প্রকাশ থাকে যে, যাঁহারা অন্যত্র মুরিদ আছে তাঁহারও এই ওজিফা পড়িতে পারেন।তার জন্য তাহাদিগকে সাবেগ পীর বা ওজিফা পরিত্যাগ করিতে হইবে না।
হাক্কানী দরূদ শারীফঃ-আল্লাহুম্মা সাল্লে অসাল্লেম অ বারেক আলা আব্দেকার রাসুলিল কারিম রাহমাতাল্লিল আলামিন শাফিয়েল মুজনেবিন সাইয়েদেনা মাওলানা নাবিয়েনা মহাম্মদেদেঁও অ আলা আলেহি অ আহলে বায়তিহি অ আওলাদিহি অ জুরিয়াতিহি অ আজওয়াজিহি অ আসহাবিহি আওলীয়ায়েহি অ উম্মাতেহি আজমাইন কামাসাল্লায়তা অ সাল্লামতা অ বারেকতা অ রাহেমতা আলা সাইয়েদেনা ইব্রাহিমা অ আলা আলে সাইয়েদেনা ইব্রাহিমা ইন্নাকা হামিদুম মাজিদ।
মোনাজাতঃ- এলাহী রাহমত জিয়াদা কর তামাম আলমের উপর। এলাহী রাহমত জিয়াদা হাজরত মাওলানা সুফী মুফতী আজানগাছী (রহঃ)সাহেবের উপর।এলাহী রাহমত জিয়াদা কর আলেফারুকীর উপর। এলাহী রহমত জিয়াদা কর আস্তানা আজানগাছী ফারুকি মাঞ্জিলের উপর।এলাহী রহমত জিয়াদা কর আমার উপর এবং যাঁহারা এই ওজিফা পড়েন তাঁহাদের উপর আমীন। এই মোনাজাতের পর ইচ্ছা হলে আন্য মোনাজাতও করতে পারেন।